• "মনের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন "
  • "মানসিক স্বাস্থ্য বিনা স্বাস্থ্য নেই"
  • "সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য হোক বৈশ্বিক অগ্রাধিকার।"
  • "মনের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন "
  • "মানসিক স্বাস্থ্য বিনা স্বাস্থ্য নেই"
  • "সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য হোক বৈশ্বিক অগ্রাধিকার।"
  • "মনের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন "
  • "মানসিক স্বাস্থ্য বিনা স্বাস্থ্য নেই"
  • "সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য হোক বৈশ্বিক অগ্রাধিকার।"

শিশুদের ও ঘুমের সমস্যা হয়

ডা. সাইফুননাহার

শিশুদের মাঝে অনেকেই বিভিন্ন প্রকার ঘুমের সমস্যায় ভোগে।অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সমস্যা গুলো ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। কিন্তু, কিছু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে তাদের ঘুমের সমস্যা দৈনন্দিন কর্মকান্ডএ বংতাদের সার্বিক সুস্থতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।অনেক সময় শিশুর রাতে ঘুমনা হওয়ার কারণে মা—বাবার ও ঘুমের সমস্যা হয়, নিজেদের মাঝে মনোমালিন্য হয়, একে অপরকে দোষারোপ করে, স্বাস্থ্য হানি হয়, কাজে ব্যাঘাত ঘটে, সম্পর্কে টানা পোড়েন চলতে থাকে।তথাপি অনেক মা—বাবাই বোঝেন না তাদের শিশুর ঘুমের সমস্যা রয়েছে অথবা বুঝলে ও তা সমাধানের ব্যাপারে সচেতন থাকেন না।

শিশুদের ঘুমের সমস্যা তখনই তাদের মা-বাবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে যখন শিশুরা আশানুরূপ পড়াশোনা করতে পারেনা, স্কুলের সময় ঘুমায়, মাথাব্যথা হয়, মনোযোগে সমস্যাহয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, স্কুল থেকে অভিযোগ আসে কিংবা শিশু কথায় কথায় রাগ দেখাতে শুরু করে।সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, ১-৫বৎসর বয়সের শিশুদের মাঝেও শতকরা ২৫জন শিশু বিভিন্ন ধরনের ঘুমের সমস্যায় ভোগে।ঘুমের সমস্যাগুলো বিভিন্নমাত্রায়, বিভিন্ন রূপে হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসায় ভালো হয়।তাই মা-বাবার তাদের শিশুদের ঘুমের সমস্যা এবং লক্ষণের ব্যাপারে জানা গুরুত্বপূর্ণ।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,  বয়স অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর দৈনিক কত ঘণ্টা স্বাভাবিক এবং গুণগত মানসম্মত ঘুম প্রয়োজন তা জানা।


বয়স অনুযায়ী শিশুর প্রয়োজনীয় ঘুমেরসময়-তালিকা:-


১-৪সপ্তাহ : ১৬-১৭ঘণ্টা।

১-৪মাস : ১৬-১৭ঘণ্টা।রাতের ঘুমেপরিমাণ বাড়তে থাকে।

৪মাস-১বছর : ১৪-১৫ঘণ্টা।

১-৩বছর : ১২-১৪ঘণ্টা।রাতেই বেশিঘুমায়, দিনে একবার ন্যাপ নেয় অথবা অল্প সময়ের জন্য ঘুমায়।

৩-৬বছর : ১১-১২ঘণ্টা।

৭-১২বছর : ১০-১২ঘণ্টা।

১৩-১৮বছর : ৬-৮ঘণ্টামোটা দাগে শিশুদের ঘুমের সমস্যা কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়-ডিস্সমনিয়া এবং প্যারাসমনিয়া।


ডিস্সমনিয়া:

ইনসমনিয়া এবং হাইপারসমনিয়া- এরমাঝেঅন্তর্ভুক্ত। ইনসমনিয়াহলো ঘুমাতে যাওয়ার পর সহজে ঘুম না আসা, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, খুব সকালে ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা একেবারেই ঘুম না হওয়া ইত্যাদি।যা কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ কিংবা তারও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, যা শিশুর দৈনন্দিন কর্মকান্ড কে ব্যাহত করে, শিশুর মাঝে সতেজ অনভুতির অভাব তৈরি করে, ফলে শিশুর মাঝে দিনের বেলা ঘুমঘুম ভাব থাকে।মানসিকচাপ, শারীরিক অসুস্থতা (অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ, অ্যালার্জি বা চুলকানি রোগ, থাই রয়েডর সমস্যা, হাড় এবং মাংস পেশিতে ব্যথা, গলা-বুকজ্বলা, দাঁত ব্যথা ইত্যাদি), মানসিক রোগ  (ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি), ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি ইনসমনিয়ার কারণ হতে পারে।

কিছু স্নায়ু বিকাশ জনিত রোগ যেমন : অটিজম, অ্যাসপার জারসসিনড্রোম, লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি, হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার ইত্যাদি ও শিশুদের ইনসমনিয়ার কারণ হতে পারে।আপনজনদের  (বাবা, মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি অথবা গুরুত্বপূর্ণ পরিচর্যাকারী) কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ভয়, স্কুলে পড়ার চাপ, পারিবারিক দ্বন্দ-কলহ, বুলিং, ভাই-বোন বা বন্ধুর সাথে কলহ, নতুন স্থানে গমন, নতুন রুটিন ইত্যাদি শিশু দের মানসিক চাপের কারণ হতে পারে এবং তা থেকে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।অনেক সময় দেখা যায় নির্দিষ্ট কোনো গান, গল্প না শুনলে শিশুর ঘুম আসে না, নির্দিষ্ট কোনো আপন জনের নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে আদরকরা, জড়িয়েধরা, কোলে নেয়া ইত্যাদির অভাব বোধ করলে ও শিশু ঘুমাতে পারেনা । এমন মাঝে মাঝে হলে ক্ষতি নেই, কিন্তু তা বেশিদিন চলতে থাকলে অবশ্যই তা ঘুমের সমস্যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

হাইপার সমনিয়া: হাইপার সমনিয়া হলো রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও দিনের বেলায় ঘনঘন ঘুমানো অথবা তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকা এবং ক্লান্ত বোধকরা, সকাল বেলা ঘুম থেকে জাগতে কষ্ট হওয়া । অব্সট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, নারকোলেপ্সি, রেস্টলেস লেগসিন ড্রোম ইত্যাদি হাইপার সমনিয়ার কারণ।

প্যারাসমনিয়া ঘুমের বিভিন্ন ধাপে অথবা ঘুমের মাঝে অথবা ঘুম এবং সজাগ অবস্থার মাঝামাঝি পর্যায়ে সংঘটিত কিছু আচরণ বা শারীর বৃত্তীয় কাজের উপস্থিত থাকলে সেটিকে বলা হয় প্যারা সমনিয়া । যেমন : নাইটমেয়ার, নাইটটেরর, স্লিপওয়াকিং, ব্রুক্সিজম, স্লিপইন্যিউরেসিস, স্লিপঅ্যাপনিয়া, রেস্টলেস লেগসিন ড্রোম ইত্যাদি।

 

নাইটমেয়ার : 

এটিকেড্রিম অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার বা স্বপ্নোদ্বেগ রোগও বলাযায়। এক্ষেত্রে শিশু স্বপ্নে এমন কিছু দেখে যা তাকে উদ্বিগ্ন, ভীত এবং অস্থির করে তোলে।ঘুমের র‌্যাপিড আইমুভমেন্ট (REM) ধাপে এটি হয়।এক্ষেত্রে শিশু রেমস্লিপ থেকে সম্পূর্ণ সচেতন অবস্থায় ফিরে আসতে পারে এবং স্বপ্নের বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারে । দিনের বেলায় ঘটেযাওয়া কোনো ভীতিকর অবস্থা থেকে অথবা উদ্বেগ জনিত কারণে (পরীক্ষার পূর্বে আপনজন অসুস্থ থাকলে, কারো কাছ থেকে হুমকি পেলে) এটি ঘনঘন হতে পারে। ৫-৬ বৎসর বয়সের শিশুদের মাঝে এটি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ জনিত রোগ, জ্বর, মানসিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ এবং মাদকের প্রত্যাহার জনিত কারণে ও এমনহতেপারে।


নাইটটেরর : 

এটি নন-রেম স্লিপে ঘটে।ঘুমাতে যাওয়ার ৯০ মিনিট পর অথবা প্রতি ৯০ মিনিট অন্তর অন্তর শিশুর ঘুম ভেঙে যায়, সে শোয়া থেকে ওঠে বসে, কখনো দাঁড়িয়ে যায়, কখনো ঘুমন্ত অবস্থায় হাঁটে, প্রচন্ড অস্থির এবং আতঙ্ক গ্রস্ত থাকে । কখনো জোরে কান্না কাটি করে । হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায় । শিশু বুঝতে পারে না তার কী করতে হবে।তবে কয়েক মিনিটের মাঝেই শিশুটি  ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যায় এবং আবার ঘুমিয়ে পড়ে।এক্ষেত্রে শিশু স্বপ্নে কী দেখেছে তা মনে করতে পারে না বা করলে ও খুব কম মনে করতে পারে। এটি নাইট মেয়ারের চেয়ে কম পরিলক্ষিত হয়।পরিবারে কারো এ রোগ থাকলে বংশগত ভাবে হতে পারে।সাধারণত শৈশবে শুরু হয়ে শৈশবেই শেষহয়, তবে কখনো কখনো প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরও চলতে থাকে।


স্লিপওয়াকিং: 

শিশু ঘুমের মাঝে হাঁটে। এটি নন্-রেমস্লিপের গভীর পর্যায়ে (স্টেজ৩-৪ ) হয়।

সাধারণত রাতের প্রথমার্ধে হয়। ৫-১২ বৎসরের শিশুদের মাঝে সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়।যাদের এই সমস্যা রয়েছে তাদের মাঝে প্রতি ১০০ জনে ১৫ জন শিশু অন্তত একবার ঘুমের মাঝে হাঁটে ।মাঝে মাঝে বড়ো হওয়ার পর ও এ সমস্যা থেকে যায়। এটি পারিবারিক বা বংশগত ভাবে হতে পারে।ঘুমের মাঝে অধিকাংশ শিশু সত্যি কার অর্থে হাঁটে না । তারা ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়, নড়াচড়া করে, সাধারণত চোখ খোলা রেখে চারপাশে হাঁটে,কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় না এবং তাদের কে ঘুম থেকে জাগানো খুব কঠিন হয়।সাধারণত তারা আবার বিছানায় ফিরে যায়, কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়।এরা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কী কী করেছিল তা পরদিন মনে করতে পারে না।অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ সমূহ কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।এরা নিজের এবং অন্যের জন্য হুমকিস্বরূপ । কারণ, নিজের অজান্তে নিজের এবং অন্যের জন্য ক্ষতিকারক কিছু করে ফেলতে পারে তাই তাদের জন্য প্রতিরক্ষামলূক ব্যবস্থা রাখতে হবে । যেমন : দরজা-জানালা তালা বন্ধ রাখা, ঝুঁকিপর্ণূ জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলা ইত্যাদি।

 

স্লিপঅ্যাপনিয়া :

একজন শিশু যদি ঘুমের মাঝে ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস নিতে না পারে তা হলে তা ভীতিকর। লক্ষ করলে দেখা যাবে, শিশু টি জোরে জোরে নাক ডাকছে ,  মুখ খোলা রেখে ঘুমাচ্ছে, দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব থাকছে।বেশির ভাগ শিশু জানেই না তারা এমন করছে । শিশুদের টন্সিল, এডেনয়েড, কানের সংক্রমণের কারণে ও রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যায়।দিনের বেলায় ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে, পড়াশোনা এবং অন্যান্য কাজে মনোযোগ দিতে পারেনা, মেজাজ খিটখিটে হয়েপড়ে, আচরণগত সমস্যা, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।তাই যত দ্রুত সম্ভবচিকিৎসা নিতেহবে।

রেস্টলেসলেগ সিনড্রোম : 

যদিও  এটি বড়দের রোগ হিসেবে পরিচিত, গবেষণা বলছে শিশুদের ও এটি হতে পারে। শিশুরা বলতে পারে ‘পায়ে পোকা হাঁটছে’ ‘পা ঝিঝি করছে’ এমন অনুভূতির কথা।পায়ের মাঝে অস্বস্তি অনুভূতি থেকে রেহাই পেতে তারা বিছানায় ঘনঘন অবস্থান পরিবর্তন করে, আর তাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।

স্লিপইন্যিউরেসিসবাবেডওয়েটিং: শারীরিক কোনো সমস্যা বা রোগ না থাকা সত্ত্বেও পাঁচ বছর বয়সের পর যদি কোনো শিশু প্রায় প্রতিদিনই ঘুমের মাঝে বিছানা ভিজিয়ে ফেলে তা হলে তার স্লিপ ইন্যিউরেসিস আছে বুঝতে হবে।সাধারণত ছেলেদের মাঝে এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়।এই অনাকাঙ্খিত আচরণ পরিবর্তনের জন্য কন্টিনজেন্সি (শর্তসাপেক্ষ) ম্যানেজমেন্ট বা স্টারচার্ট মেথড ভালো কাজ করে।ব্লাডারট্রেইনিং, ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুর্হূতে চা, কফি ইত্যাদি না খাওয়া ,সন্ধ্যারপর পানি কম খাওয়া, ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ব্লাডার খালি করা ইত্যাদি পদ্ধতি গুলো একসঙ্গে অনসুরণ করলে শতকরা ৯৯ জন রোগী তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি লাভ করে।তাছাড়া ট্রাই সাইক্লিক অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্টসের মাঝেই মিপ্রামিন ভালো কাজ করে, যা একজন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনযুায়ী গ্রহণ করা উচিত।


ব্রুক্সিজম : 

ঘুমের মাঝে বেশি বেশি দাঁতে দাঁত পেষা, শব্দ করে দাঁত খিঁচা ইত্যাদি।অনেকেই মনেকরেন পেটে কৃমি হলে এমন হয়।আসলে মানসিক চাপ,  উদ্বেগ অথ বা দাঁতের কোনো সমস্যা থাকলে এমন হয়। আর এতে ঘুম মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হয়। তাই এটিকে ঘুমের সমস্যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । তবে এতে দাঁত, জিহ্বা, চোয়াল, গালের ভেতরের অংশ ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।তাই এ সমস্যাটি গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে হবে প্রতিটি মানুষের জীবনে ঘুম একটি অত্যাবশ্যকীয় এবং অপরিহার্য বিষয়।শিশুদের জন্য ভালো মানের পর্যাপ্ত ঘুম আরো বেশি প্রয়োজনীয়।কারণ, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধা গ্রস্ত হতে পারে, বিভিন্ন প্রকার আচরণ গত ও আবেগীয় সমস্যা তৈরি হতে পারে, মনোযোগ ও স্মরণ শক্তি কমে যেতেপারে, কর্ম দক্ষতা কমে যেতেপারে, শিশু বেশি বেশি খাওয়া শুরু করতে পারে এবং মুটিয়ে যেতে পারে, বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেপারে  তাই শিশুদের ঘুমের সমস্যা থাকলে প্রথমত তা সনাক্ত করা খুব জরুরি।এ সমস্যার জন্য দায়ী কারণ ও খুঁজে বের করতে হবে।আর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের অধীনে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।

শিশুর ঘুমের সমস্যা দূর করতে কিছু পরামর্শ:

প্রথমত শিশুর জন্য ঘুমের পরিবেশ তৈরি করতে হবে-পরিচিত, পরিচ্ছন্ন এবং আরামদায়ক বিছানা দিতে হবে, শোবার ঘর টা কিছুটা অথবা পুরোপুরি অন্ধকার রাখতে হবে, শান্ত-নীরব-কোলাহল মুক্ত ঘরে ঘুমাতে দিতেহবে। স্বাস্থ্য সম্মত ঘুমের জন্য ঘুমের রুটিন তৈরি করতে হবে-প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জাগতে হবে এবং বিছানা ছাড়তে হবে।  নিয়মিত ব্যায়াম, খেলাধুলা করতে হবে।


যা করা যাবেনা

ঘুমাতে যাওয়ার আগের ৪-৫ ঘণ্টা সময়ে ব্যায়াম করা, ভারী কাজ করা, চা, কফি পান করা।

বিছানায় বসে রেডিওশোনা, টিভিদেখা, মোবাইল চালানো, গল্পের বই পড়া, গেমখেলা।দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমানো। রাত ৯ টার পর ভারী খাবার খাওয়া।

বিছানায় অধিক সময় জেগে কাটানো,ঘুমাতে যাওয়ার আগে উত্তেজনা কর কোনো কাজ, কথা, গল্পকরা, চিৎকারকরা, উত্তেজনা তৈরি করবে এমন কোনো নাটক, সিনেমা দেখা ইত্যাদি। শিশু ঘুমিয়ে পড়লে বা ক্লান্ত মনে হলে বা চোখে ঘুম ঘুম ভাব থাকলে তাকে কোলে নিয়ে বসে থাকা যাবে না, তাকে তার বিছানায় শুইয়ে দিতে হবে।কোনো শারীরিক বা মানসিক রোগ থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে।


লেখকপরিচিতিঃ

ডা. সাইফুননাহার

সহকারীঅধ্যাপক (সাইকিয়াট্রি), জাতীয়মানসিকস্বাস্থ্যইনস্টিটিউট, শেরেবাংলানগর, ঢাকা।